ই-কমার্স ওয়েবসাইট বানাতে কত টাকা লাগতে পারে? কেউ বলে ১/২ হাজার আবার কেউ বলে ৪-৫ লাখ!

(যারা তেমন কিছু জানেন না বা সহজ ভাষায় বুঝতে চান তাদের জন্য এই লেখা)

উত্তরঃ আসলে একটা ই-কমার্স ওয়েবসাইট ফ্রিও হতে পারে আবার কোটি টাকারও হতে পারে।

ফ্রি কে বা কারা করে দিবে?

ধরে নিলাম সে আপনার খুব কাছের বন্ধু বা বড় ভাই বা আত্মীয় বা খুব খুব কাছের কেউ বা খুব দানশীল কেউ আপনাকে ফ্রি অথবা খুব কম দামে করে দিতে পারে। এই ব্যাপারটা পুরোপুরি আলাদা।

এবার আসল কথায় আসি—

ছোট একটা গল্প বলি। আচ্ছা মনে করেন ৯৯৯ টাকায় একটা মোবাইল সেট পাওয়া যায় আবার ৯৯,৯৯৯ টাকায়ও সেট পাওয়া যায়। এই উদাহরণ দেখে বুঝেছেন তো? ১-২ হাজার টাকার সাইট আর ৪-৫ লাখ টাকার সাইটের পার্থক্য। আবার এটাও বুঝতে হবে ৯৯,৯৯৯ টাকার সেট যে দোকানে পাওয়া যায় সেই দোকানে ৯৯৯ টাকার সেট বিক্রি করে না। ব্র্যান্ড ভ্যালু বলে একটা ব্যাপার আছে।

আচ্ছা ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে কম টাকায় ওয়েবসাইট হয় আবার কেউ বেশি টাকা চায়। এমন কেন?

যারা ফ্রি থিম ব্যবহার করে বানিয়ে দেয় বা যারা নতুন বা যারা বাসায় বসে কাজ করে বা ই-কমার্স সাইটের ব্যাপকতা বুঝতে অক্ষম তাঁরা বানিয়ে দিবে।

মনে রাখবেন যে দুই বেলা না খেয়ে থাকে তাঁকে একটা পাওরুটি দিয়ে যদি বলা হয় মানুষ খুন করতে হবে তাহলে সে তাই করবে। তার মানে এটা না যে সে পেশাদার খুনি বা সে বুঝে খুন করেছে বা মাথায় এতোটুকু বোধ-বুদ্ধি নায় যে খুন করার পর তার কী হবে!

আর একটা উদাহরণ দেয়। দেখবেন হাসপাতালে কিছু ডোম আছে। মানে যারা মৃত লাশ কাটাকাটি করে। এরা দেখবেন অনায়াসে লাশ কেটে ফেলে। দেখে মনে হতেই পারে বিরাট বড় ডাক্তার এক এক জন। কিন্তু যারা এমবিবিএস পাশ করা ডাক্তার তাঁরা অনেক সর্তক হয়ে কাজগুলো করে। আসলে কোন কিছুতে জানাশোনা না থাকলে বা পড়াশোনা না থাকলে তার কদর করতে পারা অনেক কঠিন ব্যাপার।

আর ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইটের দাম কম বেশি কেন হয়?

ধরলাম যে ওয়ার্ডপ্রেস থিমটা কেনা। আচ্ছে মনে করুন আপনি একটা শার্ট ২০০ টাকা করে পাইকারী কিনলেন এবং অপর আর একটি শার্ট ৩০০০ টাকা দিয়ে। এবার যখন বিক্রি করবেন তখন কি ৩০০০ টাকার শার্ট ৫০০ টাকায় বা ২৫০০ টাকায় বিক্রি করবেন? নাকি ২০০ টাকার শার্ট ৫০০০ টাকায় বিক্রি করবেন? যেই শার্টটি ৩০০০ টাকা সেটার কোয়ালিটি আর যেটা ২০০ টাকা সেটার কোয়ালিটি কখন এক হতে পারে না। টেকনিক্যাল ভাষায় বললে বলতে হবে যে ফাংশনালিটি, কাস্টমাইজেশন এবং সিকিউরিটি এই বিষয়গুলো দামের পার্থক্য গড়ে দেবার জন্য যথেষ্ট।

অনেকে পি এইচ পি এর লারাভেল ফেমওয়ার্ক দিয়ে বানিয়ে থাকে কিন্তু প্রাইস কম নেয় তাঁরা কিভাবে পারে?

হতে পারে আপনি যেই ধরণের সাইট চাচ্ছেন ঠিক হুবহু সেই ধরণের একটা সাইট তাদের আগেই করা আছে। তাহলে অল্প কিছু পরিবর্তন করলেই আপনার কাজ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে কম নিতে পারে। কিন্তু যদি ব্র্যান্ডের দোকানে যান তাঁরা কিন্তু ব্র্যান্ড ভ্যালুর কথা মাথায় রেখে কখনোই দাম কমাবে না।

আর সাইটের দাম ওঠা-নামা করে রিকোয়ারমেন্টের(যেমনঃ এডভান্সড ইনভেন্টরি, একাউন্টিং ইত্যাদি) উপর বেজ করে। যদি সাইটের ট্রাফিক বেশি হয় মানে বেশি মানুষের চাপ সামলাতে হয় তাহলে তার হোস্টিং এর যা দাম পড়ে সেটা দিয়ে আরো ছোট ছোট কয়টা ওয়ার্ডপ্রেস সাইট বানানো যায়।

অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে

সবাই অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে প্রোভাইড করে না। তাই হাতে গোনা কয়টা কোম্পানি প্রোভাইড করে। কিন্তু ডিভোলপার কোম্পানি সেটা ইন্ট্রিগ্রেড করে দেয়। অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে যারা প্রোভাইড করে তাদের সার্ভিসের বিনিময়ে প্যাকেজের তারতম্য ঘটে। আর প্যাকেজ যেটা ভালো সেটার দাম বেশি সাথে বিশ্বস্ততাও একটা ব্যাপার।

দারাজ, ইভ্যালি এদের কিন্তু ইনহাউজ ডিভোলপমেন্ট টিম আছে। তাই তাদের মত সাইট করতে হলে নিয়মিত ওয়েবসাইট আপডেট করতে হবে। তাই একটা সফটওয়্যার কোম্পানিকে যদি নিজেদের ডিভোলপমেন্ট পার্টনার হিসাবে রাখতে পারেন তাহলে আপনাদের জন্য ভালো হবে।

এবার সিদ্ধান্ত নিন আপনার সামর্থ্য অনুসারে। আর যেই কোম্পানির সাথে কাজ করবেন তাঁরা বেসিস মেম্বার কিনা এবং ই-ক্যাব মেম্বার কিনা সেটা যাচাই-বাছাই করে নিবেন।

ঘরে থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং নিজের বুদ্ধিকে কাজে লাগান। ধন্যবাদ।

আর্টিকেলটি সংগৃহীত হয়েছে e-Commerce Association of Bangladesh (e-CAB) গ্রুপ থেকে লিখেছেন Santunu Nag Chowdhury

Published On: March 6th, 2024 / Categories: Web Development /

Subscribe To Receive the Latest Updates

Add notice about your Privacy Policy here.